কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) থেকে সুমনঃ হাজারো দর্শনার্থীর অংশগ্রহণে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা আর ধর্মীয় ভাব গাম্ভির্যের মধ্য দিয়ে চলছে ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পূজা উৎসব। দূর্গা পূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হলেও কোটঁচাদপুরে কাত্যায়নী পূজাই প্রধান ধর্মীয় উৎসব হিসেবে পালন করা হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের আয়োজনে এ পূজা অনুষ্ঠিত হলেও এটা কোটচাঁদপুরের ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। উৎসব উপলক্ষে ইতিমধ্যেই শহর সেজেছে বর্ণিল সাজে। শহরের বিভিন্ন স্থানে তৈরি করা করা হয়েছে দৃষ্টি নন্দন গেট, প্যান্ডেল, মন্দিরসহ সারা শহরে করা হয়েছে আলোকসজ্জা। মন্দির গুলো সাজানো হয়েছে প্রাচীন ইতিহাস, ঐতিহ্যের স্থাপত্য কলা ও বিভিন্ন থিমের উপর ভিত্তি করে।এ বছর কোটচাঁদপুরে তিনটি মন্ডপে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।কোটচাঁদপুরের পুলিশ প্রশাসন ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। ইতিমধ্যে তারা নিজ নিজ আঙ্গিকে একাধিকবার মিটিং করেছেন। পূজা নির্বিঘ্ন করতে নিয়েছেন বিভিন্ন সিদ্ধান্ত।প্রতিবছর শারদীয় দুর্গা পূজার একমাস পরেই জাঁক জমক পূর্ণভাবে কোটচাঁদপুরে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।কোটচাঁদপুর উপজেলার শ্রী শ্রী জগন্নাথদেব মন্দির প্রাঙ্গণ,সলেমানপুর পূজা উৎযাপন পরিষদের সভাপতি সুব্রত চক্রবর্তী,সেক্রেটারি সুমন ঘোস,কোষাধ্যক্ষ সুজিত সাহা। জানান,গত পাঁচ বছর এর ব্যাপ্তি যেমন বেড়েছে সংখ্যাও বেড়েছে অনেক। বর্তমানে এ পূজা কোটচাঁদপুরের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব হিসেবে দুর্গা পূজার আমেজকেও ছাড়িয়ে গেছে। শাস্ত্র মতে, দ্বাপর যুগে শ্রীকৃষ্ণের জন্মের আগে গোপবালারা শ্রীকৃষ্ণকে ঈশ্বর, বন্ধু, স্বামী, পুত্র হিসাবে আরাধনা করতেন। তাদের এক মাসব্যাপি আরাধনা সে সময় কাত্যায়নী পূজা হিসেবে চিহ্নিত হতো। যার সময়কাল ছিল কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস। প্রতিমা স্থাপন থেকে শুরু করে দূর্গাপূজার আদলেই সবকিছু হতো। তবে অতিরিক্ত হিসেবে দেবী দুর্গার কোলে শ্রীকৃষ্ণের একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়। যার অর্থ দেবী দুর্গার আরাধনার মাধ্যমে কৃষ্ণের সান্নিধ্য পাওয়া। যেটি কাত্যায়নী পূজার ধর্মীয় যোগসূত্র। কোটচাঁদপুরে এই বর্ণিল পরিবেশের উৎসবে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাজারো দর্শনার্থী ছুটে আসেন উৎসাহীরা ভক্তরা। এলাকার প্রতিটি বাড়িতে আত্মিয় স্বজন আসেন পূজা দেখতে।কাত্যায়নী পূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব হলেও এটি কোটচাঁদপুরের সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। যেখানে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ সানন্দে অংশ নিয়ে থাকেন।
